ভারতের দাদাগিরি: বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতি এক দীর্ঘমেয়াদী হুমকি

"যুদ্ধ লাগবে, ভারত বাংলাদেশ আক্রমণ করবে!"—এমন কথাবার্তা আজকাল সাধারণ মানুষের মুখে মুখে। কিন্তু আসলেই কি যুদ্ধ লাগবে? বাস্তবতা বলছে, তাৎক্ষণিক কোনো যুদ্ধের সম্ভাবনা নেই। তবে ভারতীয় আগ্রাসন ও তাদের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা আমাদের জন্য সত্যিকার অর্থে এক মারাত্মক হুমকি। ভারতীয় রাজনীতির চাতুর্য, তাদের অভ্যন্তরীণ সংকট, এবং বিন্দুত্ববাদী (হিন্দুত্ববাদী) আন্দোলনের মোমেন্টাম—সব মিলিয়ে এই দাদাগিরি কেবল চাপ প্রয়োগের মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি আমাদের জাতীয় অস্তিত্বে আঘাত হানার একটি দীর্ঘমেয়াদী ষড়যন্ত্র।


ভারতের চাপ প্রয়োগের রাজনীতি:

ভারত আমাদের স্বাধীন দেশে একের পর এক চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে। আঞ্চলিক রাজনীতিতে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে তারা বাংলাদেশকে ব্যবহার করতে চায়। সীমান্তে মানুষ হত্যা, তিস্তার পানি চুক্তিতে অবহেলা, কিংবা বাংলাদেশকে চাপে রাখতে নানা আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের অবস্থান আমাদের জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা দেয়—তারা এই অঞ্চলকে নিজেদের পায়ের নিচে রাখতে চায়।
আমরা কি শুধুই দর্শক হয়ে থাকব?


অভ্যন্তরীণ রাজনীতি:

ভারতের অভ্যন্তরে নির্বাচনের সময় বাংলাদেশ হয়ে যায় তাদের প্রোপাগান্ডার প্রধান বিষয়বস্তু। "বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন"—এই মিথ্যা প্রচারণা ব্যবহার করে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে হিন্দু ভোট টানতে চায়। কংগ্রেস ও অন্যান্য দলও এর বাইরে নয়। তাদের এই অপপ্রচারের মাধ্যমে তারা ভারতের মানুষকে বিভ্রান্ত করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে।


বিন্দুত্ববাদী আন্দোলনের ইকোসিস্টেম:

বিন্দুত্ববাদী (হিন্দুত্ববাদী) আন্দোলন আজ আর কেবল একটি রাজনৈতিক প্রচারণা নয়; এটি একটি বিশাল ইকোসিস্টেমে রূপ নিয়েছে। মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং বিভিন্ন প্রভাবশালী সংগঠন এই আন্দোলনকে শক্তিশালী করছে। তাদের লক্ষ্য শুধু তাৎক্ষণিক প্রভাব নয়; বরং দীর্ঘমেয়াদে আমাদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় পরিচয় ধ্বংস করা।


বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র:

আমাদের দুর্ভাগ্য, দেশের ভেতরে এমন একদল মুনাফিক এবং ভারতীয় দালাল রয়েছে, যারা ক্ষমতার জন্য নিজেদের আত্মা বিক্রি করতে দ্বিধা করে না। এরা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে ভারতীয় স্বার্থ রক্ষা করছে। এদের কারণে আমাদের স্বাধীনতা বারবার হুমকির মুখে পড়ে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলন: সাধারণ ছাত্রদের আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা এবং রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডার মিশেল এক গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।

মুনাফিকদের ভূমিকা: দেশের অভ্যন্তরে থাকা মুনাফিকরা মুশরিকদের (অবিশ্বাসীদের) হয়ে কাজ করে। তারা নিজেরাই মুমিনদের শত্রুতে পরিণত হয়েছে।


আমরা কীভাবে প্রস্তুত হব?

যুদ্ধ নয়, বরং আমাদের দীর্ঘমেয়াদে সাংস্কৃতিক এবং কৌশলগত আগ্রাসনের মোকাবিলা করতে হবে।

জাতীয় ঐক্য: আমাদের বিশ্বাসী জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

প্রতিরোধ গড়ে তোলা: প্রশাসনে এবং রাজনৈতিক স্তরে ভারতীয় দালালদের চিহ্নিত করতে হবে।

সতর্ক থাকতে হবে: ভারতের আঞ্চলিক কূটনীতির প্রতিটি চালের বিরুদ্ধে আমাদের কৌশলগত অবস্থান নিতে হবে।


ভারতের দাদাগিরি এমন এক গল্প, যেখানে তারা নিজেকে সবসময় নায়ক সাজাতে চায়। কিন্তু বাস্তবে, তাদের কার্যকলাপ তাদেরই ভিলেন বানিয়ে দিচ্ছে।
"দাদা, দাদাগিরি কমান। না হলে যে কড়া জবাব পাবেন, সেটা আপনারাও জানেন।"
আমাদের জাতীয় সচেতনতা এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ অবস্থানই হবে এই দাদাগিরির প্রকৃত জবাব। আল্লাহ আমাদের দেশকে রক্ষা করুন।


Thanks For Comment we are reply soon as possible.

Previous Post Next Post